কক্সবাজার, শুক্রবার, ২২ নভেম্বর ২০২৪

৫ বছর ধরে অ'নি'য়'মে কপোকাত উখিয়ার স্বাস্থ্যখাত

ডাক্তার রঞ্জন যখন অতিরঞ্জিত

২০২০ সালের জানুয়ারিতে কক্সবাজারের সীমান্ত উপজেলা উখিয়ার স্বাস্থ্য বিভাগের প্রধান হিসেবে যোগদান করেন ডাক্তার রঞ্জন বড়ুয়া রাজন।

উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা হিসেবে রাজনের উপর অর্পিত হয় ১৯৬৪ সালে প্রতিষ্ঠিত উখিয়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের দায়িত্ব, ৫ বছর যাবত চেয়ার ধরে রেখে নিজস্ব সিন্ডিকেট বানিয়ে তিনি কায়েম করেছেন দুর্নীতি-অনিয়মের রাজত্ব।

এডহক ভিত্তিক নিয়োগপ্রাপ্ত হওয়ার ৮ বছর পরে ২০২২ সালে বিসিএস (স্বাস্থ্য) ক্যাডারভুক্ত হন একসময়ের ছাত্রলীগ নেতা রাজন।

বিগত সরকারের সময়কালে ক্ষমতাসীন এক নেতার কথিত আত্মীয় পরিচয় দিয়ে রাজন দেখিয়েছেন ক্ষমতা, যার প্রতাপে প্রকৃত সেবা থেকে বঞ্চিত হতে হয়েছে সাধারণ জনগণকে।

গত ৫ বছর ধরে হাসপাতালে নিম্নমানের খাদ্য সরবরাহ সহ নানা অনিয়ম করে বিপুল পরিমাণ অর্থের দুর্নীতি করেছে সুরুত আলমের সরবরাহ প্রতিষ্ঠান এন এন এন্টারপ্রাইজ।

অভিযোগ আছে,ডাক্তার রাজন প্রতিবছর দরপত্রে কারসাজির মাধ্যমে সুরুত আলম কে কাজ পাইয়ে দিয়েছেন।

সর্বশেষ ২০২৪-২৫ অর্থ বছরের জন্য কথিত বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে দরপত্র আহবান করা হয় গত জুন মাসে, কোনো দরপত্র জমাদান কারী না থাকার অজুহাত দেখিয়ে বর্ধিত করা হয়েছে সুরুত আলমের সাথে চুক্তি।

অনুসন্ধান বলছে, পাবলিক প্রকিউরমেন্ট আইন ২০০৬ ও পিপিআর ২০০৮ বিধিমালা যথাযথ অনুসারণ না করে বাৎসরিক প্রায় ৯৯ লক্ষ টাকা বাজেটের এই দরপত্র কুক্ষিগত করা হয়েছে।

দরপত্র বিজ্ঞপ্তি স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের নোটিশ বোর্ডে টাঙ্গানো হয় নি, কয়েকটি পত্রিকায় বিজ্ঞাপন দেওয়া হলেও প্রকাশের দিন পত্রিকাগুলোর সবকপি কিনে নেয় কারসাজিতে জড়িত সিন্ডিকেট।

রাজনের অবহেলায় হাসপাতালে এম্বুল্যান্স সেবা চালু নেই দীর্ঘদিন তিন বছর ধরে। রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠীর কারণে বাড়তি চাপ থাকায় বিভিন্ন দাতা সংস্থার উপহারের দুটি ও একটি সরকারি এম্বুল্যান্স থাকলেও সেগুলো অকেজো হওয়ার অজুহাতে হাসপাতাল কম্পাউন্ডে ফেলে রাখা হয় অনেক দিন।

তবে সম্প্রতি সেসব এম্বুল্যান্স এর দুটি জেলায় অন্যদুটি উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে যাওয়া হয়েছে এবং বাকি একটি উখিয়ার জন্য রাখা হলেও চালু হয়নি এখনো।

রাজনের কাছে জিম্মি উপজেলা স্বাস্থ্য বিভাগের কর্মকর্তা-কর্মচারীরা। কেউ প্রতিবাদ বা নায্যতা চাইলে অধীনস্থদের সাথে অতিরঞ্জিত ও স্বেচ্ছাচারিতামূলক আচরণ করেন রাজন।

করোনা মহামারী চলাকালীন স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের দেওয়া প্রণোদনার অর্থ রাজন আত্মসাৎ করেছেন বলে অভিযোগ করেন নাম প্রকাশ না করার শর্তে এক কর্মচারী।

ঐ কর্মচারীর দাবী, রাজন শুধু প্রণোদনার অর্থ ভূয়া বিল ভাউচার সৃজন করে হাতিয়ে নেন।

রোহিঙ্গা ক্যাম্পে কাজ করা টিকাদান কর্মীদের বেতন হাতিয়ে নেওয়ার অভিযোগও উঠেছিলো রাজনের বিরুদ্ধে।সূত্র টিটিএন

পাঠকের মতামত: